কে বেশি সম্মানের যোগ্য । নারী না পুরুষ

একটি বিষয় নিয়ে অনেক দিন যাবত লিখার ইচ্ছা ছিল। বেশ কয়েকবার চেষ্টা ও করেছি। কিন্তু প্রতিবার একই পরিনতি হয়েছে। একটু লিখার পরে আর কিছু লিখতে পারি নাই। অনেকদিন পর আজকেও আবার সেই বিষয়টি নিয়ে লেখার ইচ্ছা জেগেছে , তাই লিখতে বসলাম ।

আজকে আমার লিখার বিষয় “কে বেশি সম্মানের যোগ্য । নারী না পুরুষ ” 

আমি যদি এই প্রশ্নটি কোন ব্লগে করি তাইলে হয়তো বেশিরভাগ লোক বলবে নারী। কিন্তু বাস্তবে বললে হয়তো পুরো একটা ভিন্ন জবাব পাবো। এর মূল কারন হচ্ছে আমরা সবার সামনে নিতিবান (ভালো লোক) হিসেবে থাকতে পছন্দ করি। কিন্তু বাস্তবে আমরা নীতিবিবর্জিত জাতি। 

এখন আমি আমার মূল কথায় যাই। আসলে কে বেশি সম্মানের যোগ্য ? আমাকে কেউ জিজ্ঞেস করলে এখন হয়তো একতাই জবাব দিব, নারী । কিন্তু এই প্রশ্ন যদি আমাকে আর দশ বছর আগে করা হইত তাহলে হয়তোবা আমার জবাব ভিন্ন হতে পারত। ঠিক এই রকম আজকে যদি স্কুলে পড়ুয়া ১০০ জন ছাত্রকে আমি এই প্রশ্ন করি,অন্তত ৯৫ জনের জবাব হবে পুরুষ । শুধু তাই না আমি যদি আমাদের দেশের পূর্ণবয়স্ক ১০০ জনকে এই প্রস্ন করি পুরুষের পক্ষে ভোট পরবে অন্তত ৭০, কিন্তু কেন তারা এই জবাব দেয় ? আমি যে কয়জনকে জিজ্ঞেস করেছি তারা একই যুক্তি দেখিয়েছে। তারা সারা দিন রোদে গরমে কষ্ট করে টাকা উপার্জন করে , তাদের টাকায় বাসা চলে। তাদের টাকায় নারিরা চলে , তাই তারাই নাকি সম্মান পাওয়ার বেশি যোগ্যতা রাখে। যদিও আমার কাছে এই যুক্তিটি কখনই গ্রহণযোগ্য না। কেন, নারিরা কি টাকা পয়সা রোজগার করে না ? আবার আমার এই প্রশ্নেও আমাদের সমাজের অনেক বিজ্ঞ (ধর্মীয়) লোকের সমস্যা আছে। নারিদের নাকি ঘর থেকে বেরুতে নেই… 


এখানে তো মাত্র একটি বিষয় বললাম যা পুরুষরা হয়তোবা বলে। আমাদের (পুরুষ) কাছে এই রকম আরও খুঁড়া যুক্তি আছে , থাকে থাকবেই। এই বার আমি আমার মূল আলোচনায় আসি , কেন আমি মানে করি নারিরা সম্মান পাওয়ার বেশি যোগ্য। (আমার যুক্তি গুলো পয়েন্ট আকারে দিয়ে দিলাম)

  • নারীরাই কিন্তু পৃথিবীতে একমাত্র যারা নিজেদের মধ্যে আরেকটি স্বত্বার জন্ম দেয়ার মাধ্যমে আমাদের পৃথিবীতে নিয়ে আসে।
  • নারীরা কি আজকাল ঘর সামলানোর সাথে সাথে টাকা উপার্জন করছে না?
  • আপনি যখন ছোটবেলায় অসুস্থ হইতেন বা ক্ষুধায় কাঁদতেন তখন কে আপনার জন্য কাঁদত মা না বাবা? ভাই না বোন ?
  • নারীরাই একমাত্র যারা জীবনের একটা অংশ কাটায় এক সংসারে এবং বিয়ের পর সেই সংসার ত্যাগ করে যোগ দিতে হয় অন্য সংসারে তাঁর পূর্ব সংসারের সব মায়া ত্যাগ করে।
  • আমি নিজে অনেকবার দেখেছি যখন ভাই অসুস্থ হয় তখন তাঁর বোন তাঁর জন্য অনেক কষ্ট করে। কিন্তু ভাইরা কখন তা করে না। এ থেকে আমি একটা জিনিস বুঝেচি, মেয়েরা সত্তিই ছেলেদের থেকে বেশি দয়াবান (বা নিঃস্বার্থ ) হয়ে থাকে

উপরে তো আমি মাত্র কয়েকটা যুক্তি দিয়েছি যা দেখায় নারীরা কেন বেশি সম্মান পাওয়ার যোগ্য। এই রকম আর অনেক অনেক কারন আছে যে কারনে নারীরা পুরুষদের থেকে বেশি সম্মান পাওয়ার যোগ্য।   এখন আমি আমার পূর্বের একটা কথায় আবার ফিরে যেতে চাই , আমি বলেছিলাম আমার আজকের জবাব আর ১০ বছর পুরন জবাব হয়তো এক না  ও হতে পারত। আমি এইরকম বলতেছি কারন, আমাদের সমাজে বেশিরভাগ সময় একটি জিনিস বলা হয় বা শিখানো হয় যে নারীরা পুরুষদের থেকে কম সামর্থ্যবান । আর এই কারনে আমারা মনে করি পুরুষরা নারী হতে উত্তম। আর এই কারনেই প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে বিভিন্ন রকমের নারী নির্যাতন (আমাদের সমাজের মানুষরুপি পশুরা নিত্যনতুন নির্যাতনের কৌশল আবিস্কার করেই চলেছে)। এই সমস্যা  সমাধানের একটাই উপায়, আর তা হচ্ছে নারী পুরুষদের সমান অধিকার দেয়ার। যদিও আমাদের দেশে কাগজে কলমে তা আছে কিন্তু বাস্তবে তা নাই। তাই আমাদের নারী পুরুষের সমান অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে।

শেষ করার আগে আমি আবার একই কথা বলতে চাই সত্যিই নারীরা সম্মান পাওয়ার বেশি অধিকার রাখে। তাই  চলুন নারিদের তাদের প্রাপ্য সম্মান প্রদর্শন করি। আর সেই দিকেও খেয়াল রাখি যাতে তাদেরকে কেউ  উত্ত্যক্ত করতে না পারে।

আমি সত্তিকার অর্থেই অনিয়মিত বাংলা ব্লগার। বল্গে লেখার জন্যই হয়তোবা ৬ মাসে একবার বাংলা লেখা হয়, তাই আশা করি আমার ভুল ত্রুটিগুলো আপনারা মাফ করবেন……

1 Comment

  1. Shahadat Hussain Parvez
    Reply

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *